অতিঘন পদ্ধতিতে আম চাষের আধুনিক পদ্ধতি
আমাদের দেশের শতকরা ৮০ শতাংশ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। কৃষি কাজের উপর নির্ভর
করে জীবন ধারণ করে। আগের কৃষকেরা ধান,পাট,আখ,ভুট্রা,আলু,সরিষা.মসুর,ছোলা,কলাই
ইত্যাদী চাষ করত। বর্তমানে এসব ধান,পাট,আখ,ভুট্রা,আলু,সরিষা.মসুর,ছোলা,কলাই
ইত্যাদী চাষের পাশাপাশি আম বাগান,পেয়ারা,কলা,বড়ই,মালটা,ড্রাগন ইত্যাদী চাষ করে
বেশ লাভবান হচ্ছে। এর মধ্যে অতি ঘন পদ্ধতিতে আম চাষ অন্যতম।
পেইজ সূচিপত্র:অতিঘন পদ্ধতিতে আম চাষ
অতি ঘন পদ্ধতিতে আম চাষঃ
অতিঘন পদ্ধতিতে আম চাষ এটি
একটি আধুনিক কৃষি পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে আম চাষ করলে অতিঅল্প জমিতে অধিক সংখ্যক
আম গাছের লাগানো যায়। আম চাষের জন্য প্রথমে জমি নির্বাচন করা এরপর জমি
চাষ করা। জমি নির্বাচনের ক্ষেত্রে সর্ব প্রথম যে বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে হবে
সেটি হলো জমি একটু উচু হতে হবে যাতে করে জমিতে বৃষ্টির পানি জমে না
থাকে। খরা মৌসুমে পানি সেচের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
অতি ঘন পদ্ধতিতে আম চাষের জন্য জমি নির্বাচনঃ
- অতি ঘন পদ্ধতিতে আম চাষের জন্য আপনি এমন জমি নির্বাচন করবেন যাতে জমি একটু উচু পানি জমে না থাকে।
- পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন ।
- অতি ভালো পদ্ধতিতে আম চাষের জন্য বেলে দোআঁশ মাটি উত্তম ।
- আপনি জমি ভালোভাবে চাষ করে নিবেন।
- আপনি নালা তৈরী করে নিবেন যাতে প্রতি নালা থেকে নালার দূরত্ব ২.৫ মিটার ।
- নালার গভিরতা এমন ভাবে করবেন যাতে সহজে পানি নিষ্কাশন করা সম্ভব হয় এবং সেচ কাজে সহযোগিতা করে
অতি ঘন পদ্ধতিতে আম চাষে চারা রোপন পদ্ধতিঃ
- চারা রোপনের পূর্বে জমিতে পযাপ্ত পরিমান গোবর সার ব্যবহার করতে হবে।
- অল্প পরিমানে রাসায়নিক সার ব্যাবহার করা যেতে পারে।
- তবে বেশি পরিমানে রাসাযনিক সার ব্যাবহার করলে ভাল ফল পাওয়া যাবেনা ।
- চারা রোপনের ক্ষেত্রে সারি থেকে সারির দুরত্ব ২.৫ মিটার বা ৮ফিট এবং চারা থেকে চারার দুরত্ব ১.৫মিটার বা ৫ফিট।
- ১ বিঘা জমিতে (১৪৪০০০বর্গ ফুট) ২৫৪ টি চারা রোপন করা যাবে।
জাত নির্বাচন:
অতি ঘন পদ্ধতিতে আম চাষের জন্য আমরা যে সকল জাত নির্বাচন করব তার মধ্যে
আমরুপালি ,
বারি-৪,লক্ষনা ,ক্ষীরসা পাত ইত্যাদি জাত অন্যতম। তকব আগাম জাতের আম যে গুলো
আগে পাকে সেগুলো (১ মে থেকে ৩০সে জুনের মধ্যে পাকে)
অতি ঘন পদ্ধতিতে আম চাষ পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য:
সাধারণত প্রতি একরে ৬০০ থেকে ৭০০ টি চারা রোপন করা যায় ।প্রচলিতপদ্ধতিতে ৪০
থেকে ৭০ টি চারা রোপন করা যেত।
- গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ২মিটার এবং সারি থেকে সারির দূরত্ব ৩ মিটার।
- গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ২.৫ মিটার এবং সারি থেকে সারির দূরত্ব ২.৫ মিটার ।
- প্রথম থেকেই চারা ছাটাই করতে হয় । এজন্য প্রতিবছর গাছের চারা যাতে গাছ খাটো ও ছোট রাখা যায়।
- সেচ ব্যবস্থা :পর্যাপ্ত সেচের ব্যবস্থা থাকা দরকার
- গাছের পুষ্টিমান বজায় রাখার জন্য নিয়মিত সার প্রয়োগ করতে হবে যেমন নাইট্রোজেন, ফসফেট পটাসিয়াম ,ম্য়াগনেশিয়াম এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ জৈব সার (গোবর সার) দেওয়া যেতে পারে।
অতি ঘন পদ্ধতিতে আম চাষ সুবিধা সমহ:
- তিন থেকে চার বছরে ফলন পাওয়া শুরু হয়।
- গাছ ছোট হওয়ায় পরিচর্যা সুবিধা হয়।
- পরিচর্যায় লেবার খরচ কম হয়।
- সাধারণ জমির তুলনায় ৮ থেকে ১০ গুণ ফলন বেশি পাওয়া যায়।
- গাছ ছোট হওয়ায় আম প্যাকেটিং করার সুবিধা বেশি।
- শ্রম,পানি সার খরচ তুলনামুলক ভাবে কম।
- গাছেরপোকামাকড় দমন ও কীটনাশক প্রয়োগ করা সহজ হয়।
- আধুনিক বাগান ব্যাবস্থার জন্য উপযোগী।
অতি ঘন পদ্ধতিতে আম চাষ অসুবিদা সমহ:
- গাছ নিয়মিত ছাটাই না করলে গাছ আকারে বড় হয়ে যাবে এবং ফলন কমে যাবে।
- নিয়মিত সেচ ব্যবস্থা না থাকলে আশানুরুপ ফল পাওয়া যাবে না।
- সঠিক পরিচর্যা না থাকলে গাছ সুস্থ সবল থাকবে না।
- অতি ঘন হওয়ার কারণে পযাপ্ত আলো বাতাস প্রবেশ করে না।
- পাঁচ থেকে সাত বছর পর গাছ পর্যাপ্ত জায়গা পায় না।
- এসব বাগান বেশি দিন স্থায়ী হয় না(১৫-২০) বছর স্থায়ী হয়।
উপসংহার:
অতি ঘনপদ্ধতিতে আম চাষের জন্য বাংলাদেশের আবহাওয়া অত্যান্ত উপযোগী। এটি
চাষের ফলে
কৃষকেরা বেশি লাভবান হবে।
রায়আন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url